শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১১:১৬ অপরাহ্ন
আমার সুরমা ডটকম : সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম অন্তর্ভুক্ত করার বিরুদ্ধে রিট করার এখতিয়ার নেই মর্মে ১৫ জন বিশিষ্ট নাগরিকের এ সংক্রান্ত আবেদন খারিজ করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগ। সোমবার দুপুর ২টায় বিচারপতি নাঈমা হায়দার, বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মো. আশরাফুল কামালের সমন্বয়ে গঠিত বিশেষ হাইকোর্ট বেঞ্চে এ রুলের শুনানি শেষে এ সংক্রান্ত রিট খারিজ করে দেন।
১৯৮৮ সালে সংবিধানে অনুচ্ছেদ ২-এর পর ২(ক) এ ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম হবে ইসলাম, তবে অন্যান্য ধর্মও প্রজাতন্ত্রে শান্তিতে পালন করা যাইবে’ যুক্ত করা হয়। এ বিধানের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে একই সালে ‘স্বৈরাচার ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ কমিটি’র পক্ষে রিট (নম্বর ১৪৩৪/১৯৮৮) দায়ের করেন ১৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তি।
এদের মধ্যে ছিলেন সাবেক প্রধান বিচারপতি কামালউদ্দিন হোসেন, কবি সুফিয়া কামাল, অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, সাবেক বিচারপতি দেবেশ চন্দ্র ভট্টাচার্য, সাবেক বিচারপতি কে এম সোবহান, অধ্যাপক খান সরওয়ার মুর্শিদ, আইনজীবী সৈয়দ ইশতিয়াক আহমেদ, অধ্যাপক কবীর চৌধুরী, কলিম শরাফী, অধ্যাপক মোশাররফ হোসেন, মেজর জেনারেল (অব) সিআর দত্ত, বদরুদ্দীন উমর, সাংবাদিক ফয়েজ আহমদ, বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর ও অধ্যাপক আনিসুজ্জামান।
এ রিট দায়েরের দীর্ঘ ২৩ বছর পর ২০১১ সালের ৮ জুন একটি সম্পূরক আবেদন করা হয়। ওইদিনই বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। পাশাপাশি শুনানির জন্য অ্যামিকাস কিউরি হিসেবে ১৪ জন জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে নিয়োগ দেয়া হয়। তারা হলেন টিএইচ খান, ড. কামাল হোসেন, ব্যারিস্টার রফিক-উল হক, ব্যারিস্টার এম আমীর-উল ইসলাম, ড. এম জহির, মাহমুদুল ইসলাম, এএফ হাসান আরিফ, ব্যারিস্টার রোকনউদ্দিন মাহমুদ, ব্যারিস্টার আখতার ইমাম, ফিদা এম কামাল, ব্যারিস্টার আজমালুল হোসেন কিউসি, আবদুল মতিন খসরু, ইউসুফ হোসেন হুমায়ুন ও এএফএম মেসবাহ উদ্দিন। তাদের মধ্যে ড. এম জহির ও মাহমুদুল ইসলাম ইন্তেকাল করেছেন।
এ রুল জারির কিছুদিন পর একই বছরের ২৫ জুন সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী করা হয়। এতে ২ অনুচ্ছেদ আবারও সংশোধন করা হয়। সংশোধনীতে বলা হয়, ‘প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, তবে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য ধর্ম পালনে রাষ্ট্র সমমর্যাদা ও সমঅধিকার নিশ্চিত করবে’। এ সংশোধনীর পর আবারো সম্পূরক আবেদন করা হয়। এ আবেদনের পর ২০১১ সালের ১ ডিসেম্বর হাইকোর্টের একই বেঞ্চ সম্পূরক রুল জারি করেন। এরপর এ রুলের ওপর হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানির জন্য গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আবেদন করেন রিট আবেদনকারীপক্ষ। এ আবেদনের প্রেক্ষিতে বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি।
এদিকে সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ দেয়ার ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে আজ সোমবার দেশব্যাপী জামায়াতে ইসলামীর ডাকে হরতাল ডাকে। এছাড়া হেফাজতে ইসলাম সংবিধান থেকে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বাদ না দেয়ার জন্য প্রয়োজনী ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে আজ সকালে প্রধান বিচারপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।